রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষ ! এই বিশ্বাসই ঈমান ' বিপরীতে কুফরি ।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
রাসুল মুহাম্মাদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম 'মানুষ নাকি অন্য কোন জাত'?

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র আল কোরআনের সুরা বানু ইসরাঈলের ৯৪ নং আয়াতে বলেন

وَمَا مَنَعَ النَّاسَ اَنۡ یُّؤۡمِنُوۡۤا اِذۡ جَآءَهُمُ الۡهُدٰۤی اِلَّاۤ اَنۡ قَالُوۡۤا اَبَعَثَ اللّٰهُ بَشَرًا رَّسُوۡلًا [৯৪]
আর যখন মানুষের কাছে হিদায়াত আসে'
তখন তাদেরকে ঈমান আনা থেকে বিরত রাখে কেবল তাদের এ কথা যে'
আল্লাহ্ কি মানুষকে রাসুল করে পাঠিয়েছিলেন।

অর্থাৎ প্রত্যেক যুগের অজ্ঞ ও মূর্খ লোকেরা এ ভুল ধারণায় নিমজ্জিত থাকে যে, মানুষ কখনো রাসূল হতে পারে না। তাই যখন কোন রাসূল এসেছেন এবং তারা দেখেছে' তিনি পানাহার করছেন, তাঁর স্ত্রী-সন্তানাদি আছে , তিনি রক্ত-মাংসের মানুষ তখন তারা ফায়সালা দিয়ে বসেছে যে, এ ব্যক্তি রসূল নয়, কারণ এতো মানুষ। কুরআনের অন্যান্য বহু স্থানে আল্লাহ তা'আলা তাদের এ প্রবণতার কথা উল্লেখ করেছেন।
যেমনঃ সুরা আল-ফুরকান-এর ৭ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন

وَقَالُوۡا مَالِ هٰذَا الرَّسُوۡلِ یَاۡكُلُ الطَّعَامَ وَیَمۡشِیۡ فِی الۡاَسۡوَاقِ ؕ  لَوۡلَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡهِ مَلَكٌ فَیَكُوۡنَ مَعَهٗ نَذِیۡرًا ۙ[৭]
আরও তারা(অস্বীকারকারীরা)বলে- ‘এ কেমন রাসূল’ যে খাওয়া-দাওয়া করে এবং হাটেবাজারে চলাফেরা করে।
তার কাছে কোন ফিরিশতা কেন নাযিল করা হল না, যে তার সঙ্গে থাকত সতর্ককারীরূপে।

সুরা আল-আম্বিয়া এর ৮ নং ও সুরা ফুরকানের ২০ নং আয়াতে   তাদের(অস্বীকারকারীদের)কে আল্লাহ বলেনঃ

وَمَا جَعَلۡنٰهُمۡ جَسَدًا لَّا یَاۡكُلُوۡنَ الطَّعَامَ وَمَا كَانُوۡا خٰلِدِیۡنَ[৮]
আর আমরা তাদেরকে এমন দেহবিশিষ্ট করিনি যে, তারা খাবার গ্রহণ করত না। আর তারা চিরস্থায়ীও ছিল না।

وَمَاۤ اَرۡسَلۡنَا قَبۡلَكَ مِنَ الۡمُرۡسَلِیۡنَ اِلَّاۤ اِنَّهُمۡ لَیَاۡكُلُوۡنَ الطَّعَامَ وَیَمۡشُوۡنَ فِی الۡاَسۡوَاقِ ؕ  وَجَعَلۡنَا بَعۡضَكُمۡ لِبَعۡضٍ فِتۡنَةً ؕ  اَتَصۡبِرُوۡنَ ۚ  وَكَانَ رَبُّكَ بَصِیۡرًا ٪ [২০]
আর আপনার(মুহাম্মাদ সাঃ এর) আগে আমরা যে সকল রাসূল পাঠিয়েছি তারা সকলেই তো খাওয়া-দাওয়া করত ও হাটে-বাজারে চলাফেরা করত।  এবং (হে মানুষ) আমরা তোমাদের এক-কে অন্যের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। তোমরা ধৈর্য ধারণ করবে কি ? আর আপনার রব তো সর্বদ্রষ্টা।
  
এবং সুরা বানু ঈসরায়েলের ১৫ নং ও সুরা ইউনুসের ২নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন

قُلۡ لَّوۡ كَانَ فِی الۡاَرۡضِ مَلٰٓئِكَةٌ یَّمۡشُوۡنَ مُطۡمَئِنِّیۡنَ لَنَزَّلۡنَا عَلَیۡهِمۡ مِّنَ السَّمَآءِ مَلَكًا رَّسُوۡلًا [১৫]
বলুন, ‘ফিরিশতাগণ যদি নিশ্চিত হয়ে যমীনে বিচরণ করত তবে আমরা আসমান থেকে তাদের কাছে অবশ্যই ফিরিশতা রাসুল করে পাঠাতাম।’

اَكَانَ لِلنَّاسِ عَجَبًا اَنۡ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰی رَجُلٍ مِّنۡهُمۡ اَنۡ اَنۡذِرِ النَّاسَ وَبَشِّرِ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَنَّ لَهُمۡ قَدَمَ صِدۡقٍ عِنۡدَ رَبِّهِمۡ ؕؔ قَالَ الۡكٰفِرُوۡنَ اِنَّ هٰذَا لَسٰحِرٌ مُّبِیۡنٌ [২]
মানুষের জন্য এটা কি আশ্চর্যের বিষয় যে, আমরা তাদেরই(মানুষদের মধ্য থেকে)  একজনের কাছে ওহী পাঠিয়েছি এ মর্মে যে, আপনি মানুষকে সতর্ক করুন এবং মুমিনদেরকে সুসংবাদ দিন যে, তাদের জন্য তাদের রবের কাছে আছে উচ্চ মর্যাদা।  কাফিররা বলে, ‘এ তো এক সুস্পষ্ট জাদুকর।

প্রত্যেক নবী রাসুলগনই ছিলেন মানুষ। আর তাঁরা মানুষ হওয়ায় কাফেরা তাদের নবুয়াত' রিসালাত মেনে নেয়নিতো বটে বরং নবী রাসুলগনকে নিয়ে তারা (কাফেরেরা) ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতো। টিক তাদের এ জঘন্যতম ব্যাপারটির কথা আল্লাহ তায়ালা  সুরা আল হিজরের ১১ নং আয়াতে বলেছেন

وَمَا یَاۡتِیۡهِمۡ مِّنۡ رَّسُوۡلٍ اِلَّا كَانُوۡا بِهٖ یَسۡتَهۡزِءُوۡنَ
আর তাদের কাছে এমন কোন রাসূল আসেনি যাকে তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত না।

*************  
এভাবে তার (মুহাম্মাদ সাঃ এর) জীবদ্দশায় তারা তাকে রাসূল হিসেবে মানেনি আর তিনি চলে যাবার দীর্ঘকাল পর তাঁর ভক্তদের মধ্যে এমনসব লোক জন্ম নিতে থাকে যারা বলতে থাকে, তিনি মানুষ ছিলেন না, কারণ তিনি ছিলেন রসূল। ফলে কেউ তাঁকে আল্লাহ বানিয়েছে, কেউ বানিয়েছে আল্লাহর পুত্র, আবার কেউ বলেছে আল্লাহ তাঁর মধ্যে অনুপ্রবিষ্ট হয়েছিলেন। মোটকথা মানবিক সত্তা ও নবুওয়াতী সত্তার একই সত্তার মধ্যে একত্র হওয়া হামেশা মূর্খদের কাছে একটি হেঁয়ালি হয়েই থেকেছে।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে যেন সঠিক দ্বীন বুঝে শোনে মানার তৌফিক দান করেন -আমিন ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সয়তান ও নারীর চক্রান্ত

হিন্দুস্তানের যুদ্ধ - গাযওয়াতুল হিন্দ

জিহাদ ''হাদিসের অপব্যাখ্যা ও বিভ্রান্তির জবাব''