যারা বলেন আমাদের নবীর (ﷺ) ছায়া ছিলনা তারা মিথ্যাবাদী
কোরআন থেকে দলিল
সূরা নাহল:48
আল্লাহ বলেনঃ
أَوَ لَمْ يَرَوْاْ إِلَى مَا خَلَقَ اللّهُ مِن شَيْءٍ يَتَفَيَّأُ ظِلاَلُهُ عَنِ الْيَمِينِ وَالْشَّمَآئِلِ سُجَّدًا لِلّهِ وَهُمْ دَاخِرُونَ
তারা কি আল্লাহর সৃজিত জিনিস দেখে না, যার ছায়া আল্লাহর প্রতি বিনীতভাবে সেজদাবনত থেকে ডান ও বাম দিকে ঝুঁকে পড়ে।
সূরা রাদ:15
وَلِلّهِ يَسْجُدُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا وَظِلالُهُم بِالْغُدُوِّ وَالآصَالِ
আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে আছে ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এবং তাদের প্রতিচ্ছায়াও সকাল-সন্ধ্যায়।
সুরা নাহলের ৪৮ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলেন আল্লাহর সব সৃষ্টির ছায়া বিনীতভাবে আল্লাহকে সেজদা করে..
যদি রাসুল ( ﷺ ) আল্লাহর সৃষ্টি হয়ে থাকেন তাহলে এই আয়াত দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমানিত হল রাসুলের (ﷺ) ছায়াও আল্লাহকে সিজদা করে।
সুরা রাদের ১৫ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলেন আসমান জমিনে যা আছে সব ও তাদের ছায়াও আল্লাহকে সেজদা করে..
যেহেতু নবীও (ﷺ) আসমান জমিনের ভিতরে সেহেতু তারও ছায়া ছিল..
যদি বলেন নবী (ﷺ) আসমান জমিনের ভিতরে না তাহলে দয়া করে বলবেন তিনি কোন জায়গার বাসিন্দা?
এবার সহিহ হাদিস থেকে প্রমাণ দিলাম নবীর (ﷺ) ছায়া ছিল।
বিশ্বনবী (ﷺ) নিজেই নিজের ছায়া দেখেছিলেন বলে প্রমাণিত। এ হাদিস তার দলিল–
.
ﻋﻦ ﺍﻧﺲ ﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﺭﺽ ﻗﺎﻝ ﺑﻴﻨﻤﺎ ﺻﻠﻌﻢ ﻳﺼﻠﻲ ﺫﺍﺕ ﻟﻴﻠﺔ ﺻﻠﻮﺓ ﺍﺫ ﻣﺪ ﻳﺪﻩ ﺛﻢ ﺍﺧﺮﻫﺎ ﻓﻘﻠﻨﺎ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺭﺃﻳﻨﺎﻙ ﺻﻨﻌﺖ ﻓﻲ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﺼﻠﻮﺓ ﺷﻴﺌﺎ ﻟﻢ ﺗﻜﻦ ﺗﺼﻨﻊ ﻓﻴﻤﺎ ﻗﺒﻠﻪ ﻗﺎﻝ ﺍﺟﻞ ﺍﻧﻪ ﻋﺮﺿﺖ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻓﺮﺃﻳﺖ ﻓﻴﻬﺎ ﺩﺍﻟﻴﺔ ﻗﻄﻮﻓﻬﺎ ﺩﺍﻧﺒﺔ ﻓﺎﺭﺩﺕ ﺍﻥ ﺍﺗﻨﺎﻭﻝ ﻣﻨﻬﺎ ﺷﻴﺌﺎ ﻧﺎﻭﺣﻲ ﺍﻟﻲ ﺍﻥ ﺍﺳﺘﺄﺧﺮ ﻓﺎﺳﺘﺄﺧﺮﺕ ﻋﺮﺿﺖ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﺑﻴﻨﻲ ﻭ ﺑﻴﻨﻜﻢ ﺣﺘﻲ ﺭﺃﻳﺖ ﻇﻠﻲ ﻭ ﻇﻠﻜﻢ ﻓﻴﻬﺎ . ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺤﺎﻛﻢ ﻓﻲ ﻣﺴﺘﺪﺭﻛﻪ ﻭ ﻗﺎﻝ ﻫﺬﺍ ﺣﺪﻳﺚ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻻﺳﻨﺎﺩ ﻭ ﻟﻢ ﻳﺨﺮﺟﺎﻩ
.
অর্থ, হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত রয়েছে, তিনি বলেন কোনো এক রাতে রাসূল (ﷺ) নামায পড়াচ্ছিলেন। তিনি সহসা সামনের দিকে হাত বাড়ান এরপর তা আবার পেছনের দিকে টেনে নেন। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ), এ নামাযে আপনাকে এমন কাজ করতে দেখেছি যা ইতিপূর্ব কখনো করেননি।
.
তিনি ইরশাদ করেন, হ্যাঁ। আমার কাছে জান্নাত উপস্থিত করা হয়েছিল। তাতে বিশাল বৃক্ষরাজি দেখতে পেলাম যেগুলোর ছড়া ঝুঁকানো ছিল। তা থেকে কিছু নিতে চাইলে আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হল আপনি পেছনে সরে দাঁড়ান। আমি সরে দাঁড়ালাম। তারপর আমার নিকট জাহান্নাম উপস্থিত করা হল, যার আলোতে আমি আমার এবং তোমাদের (সাহাবিদের) ছায়া পর্যন্ত দেখেছি।
.
(দলিল : মুসতাদরিকে হাকেম-৫/৬৪৮, সহিহ ইবনে খোজাইমাহ-২/৫০)।
.
রাসূর (ﷺ) এর ছায়া ছিল মর্মে আরো একটি সহীহ হাদীস:
ﻭﻳﺌﺴﺖ ﻣﻨﻪ ﻓﻠﻤﺎ ﻛﺎﻥ ﺷﻬﺮ ﺭﺑﻴﻊ ﺍﻷﻭﻝ ﺩﺧﻞ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﻓﺮﺃﺕ ﻇﻠﻪ ﻓﻘﺎﻟﺖ ﺇﻥ ﻫﺬﺍ ﻟﻈﻞ ﺭﺟﻞ ﻭﻣﺎ ﻳﺪﺧﻞ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻤﻦ ﻫﺬﺍ ﻓﺪﺧﻞ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
.
অনুবাদ : এমনকি হযরত যায়নব (রাঃ) রাসূল (ﷺ) এর আগমন থেকে নিরাশ হয়ে গেলেন। রবীউল আওয়ালে তার নিকট যান। ঘরে প্রবেশের প্রক্কালে যয়নব (রাঃ) তাঁর ছায়া দেখতে পান এবং বলেন, এতো কোন পুরুষ মানুষের ছায়া বলে মনে হয়। তিনি তো আমার কাছে আসেন না। তাহলে এ ব্যক্তি কে? ইত্যবসরে রাসূল (ﷺ) প্রবেশ করেন।
.
{মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৬৮৬৬}।
আলহামদুলিল্লাহ কোরআন ও সহিহ হাদিস দিয়ে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ পেশ করলাম নবীর (ﷺ) ছায়া ছিল। কাজেই নবীর ( ﷺ ) ছায়া ছিলনা বলে যে প্রপাগান্ডা চালানো হচ্ছে তা থেকে ফিরে আসুন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন